বাংলাদেশের বিবাহ বিচ্ছেদ আইন

Divorce image

বাংলাদেশে বিবাহ বিচ্ছেদ একটি আইনি প্রক্রিয়া যা নির্দিষ্ট ধাপ ও নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন হয়। বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ, প্রক্রিয়া, এবং সম্পর্কিত আইনি বিষয়গুলো জানা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনি নিরাপদ ও সঠিকভাবে আইন অনুসরণ করতে পারেন। একজন অভিজ্ঞ ফ্যামিলি লইয়ার এই প্রক্রিয়ায় আপনার জন্য সহায়ক হতে পারেন।

বিবাহ বিচ্ছেদের কারণসমূহ

বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য বাংলাদেশে কিছু বৈধ কারণ রয়েছে। প্রধানগুলো হলো:

  • স্বামীর বা স্ত্রীর অবহেলা ও নির্যাতন

  • পারস্পরিক অসম্মতি এবং সহনীয় জীবন অযোগ্য হওয়া

  • পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙা (মৌলিক বিশ্বাসঘাতকতা)

  • যৌথ জীবন চালানো অসম্ভব হওয়া

Tip: প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রমাণ গুরুত্বপূর্ণ। আইন অনুযায়ী কেস তৈরি করতে হলে যথাযথ ডকুমেন্টেশন প্রয়োজন।

ডিভোর্সের যে আইনগুলো জানা প্রয়োজন

Muslim Divorce Laws Bangladesh image

ডিভোর্স কে দিতে পারেন

স্বামী বা স্ত্রী—উভয়েই ডিভোর্স দিতে পারেন। মুসলিম আইনে স্ত্রী তিনভাবে ডিভোর্স চাইতে পারেন: (১) খুলা – যেখানে স্বামীর সম্মতি প্রয়োজন; (২) নিকাহনামার ১৮ নম্বর কলামে তালাকের অধিকার (Talaq-e-Tafwid) দেওয়া থাকলে স্ত্রী স্বামীর মতো একই প্রক্রিয়ায় তালাক দিতে পারেন; এবং (৩) তালাকের অধিকার না থাকলে স্ত্রী পারিবারিক আদালতে Dissolution of Marriage এর জন্য মামলা করতে পারেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে আইনগত নোটিশ, নথিপত্র ও প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।

ডিভোর্সের আইনি প্রক্রিয়া

স্বামী বা স্ত্রী যখন তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখন প্রথম ধাপ হিসেবে আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র বা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে একটি লিখিত তালাক নোটিশ পাঠাতে হয়। এ নোটিশের একটি কপি অবশ্যই অপর পক্ষকেও প্রদান করতে হয়। কর্তৃপক্ষ নোটিশ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে তালাক কার্যকর হয় না; নোটিশপ্রাপ্তির তারিখ থেকে কমপক্ষে ৯০ দিন অতিক্রান্ত হতে হবে। এই সময়ের মধ্যে চেয়ারম্যান বা মেয়র নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে একটি সালিসি পরিষদ গঠন করেন, যেখানে উভয় পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। আইন অনুযায়ী ৩০ দিন ও ৯০ দিনের সময় গণনার সূচনা হয় চেয়ারম্যান বা মেয়রের নোটিশ গ্রহণের দিন থেকে। সালিসি পরিষদ যদি সমঝোতা করতে ব্যর্থ হয় এবং ৯০ দিন পার হয়ে যায়, তাহলে তালাক স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হয়।

পারস্পরিক সম্মতিতে ডিভোর্স

পারস্পরিক সম্মতিতে ডিভোর্স হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে স্বামী ও স্ত্রী দুজনই স্বেচ্ছায় বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন। মুসলিম পারিবারিক আইনে এ ধরনের বিচ্ছেদকে সাধারণত মুবারাত (Mubarat) বলা হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করে না; বরং দুজনই শান্তিপূর্ণভাবে সম্পর্ক থেকে মুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্তে একমত হন। এই প্রক্রিয়ায় স্বামী-স্ত্রী উভয়েই একটি লিখিত ডিভোর্স চুক্তিপত্র তৈরি করেন, যেখানে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত, দেনমোহর, সম্পত্তি বা অন্যান্য আর্থিক নিষ্পত্তির শর্তাবলি উল্লেখ থাকে। এরপর তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র বা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে লিখিত তালাক নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাঠানোর পর একইভাবে ৯০ দিনের আইনি সময়কাল অপেক্ষা করতে হয় এবং কর্তৃপক্ষ নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সালিসি পরিষদ গঠন করেন, যাতে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। যদি উভয় পক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে এবং ৯০ দিন অতিক্রান্ত হয়, তাহলে পারস্পরিক সম্মতিতে ডিভোর্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হয়। এই প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে সহজ, কম ঝামেলাপূর্ণ এবং আইনি জটিলতা ছাড়া বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন করার একটি গ্রহণযোগ্য উপায়।

ডিভোর্স কখন আদালতে

মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী স্বামী তাঁর স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে চাইলে আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। তবে নিকাহনামার ১৮ নম্বর কলামে স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার অধিকার না থাকলে স্ত্রী Muslim Family Laws, 1939 অনুযায়ী আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করতে পারেন। আদালত বিবাহবিচ্ছেদের ডিক্রি প্রদান করলে সেই ডিক্রির সত্যায়িত কপি আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের মেয়রের কাছে পাঠানো হয়। চেয়ারম্যান বা মেয়র নোটিশ গ্রহণের তারিখ থেকে ৯০ দিন পর তালাক আইনগতভাবে কার্যকর হয়, এবং এই সময়কাল চলাকালে সালিসি পরিষদ উভয় পক্ষকে সমঝোতার জন্য নিয়ে আসে।

স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা থাকলে

তালাক ঘোষণার সময় যদি স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা থাকেন, আইনি প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন হয়। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, তালাক নোটিশ প্রাপ্তির ৯০ দিনের মধ্যে তালাক কার্যকর হবে। তবে যদি ৯০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার আগে স্ত্রী গর্ভবতী থাকেন, তবে তালাক শুধু সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই কার্যকর হবে। অর্থাৎ, ৯০ দিনের সময় ও গর্ভাবস্থা উভয়ই বিবেচনায় নেওয়া হবে, যাতে সন্তান ও মাতার অধিকার রক্ষা করা যায়। এই নিয়ম নিশ্চিত করে যে সন্তান জন্মের পর তার ভরণপোষণ ও আইনি স্বার্থ নিশ্চিত থাকে।

ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন

মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯৭৪-এর ধারা ৬ অনুযায়ী, তালাক রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। তালাক প্রদানকারী স্বামী বা স্ত্রী সংশ্লিষ্ট কাজির কাছে আবেদন করবেন। কাজি নির্ধারিত ফি গ্রহণ করে তালাক রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করবেন এবং উভয় পক্ষকে প্রত্যয়নিত কপি প্রদান করবেন। এই রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করে যে বিবাহবিচ্ছেদ আইনগতভাবে স্বীকৃত ও enforceable হয়েছে, যা সন্তান, দেনমোহর বা সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি অধিকার রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডিভোর্সের কত দিন পর বিয়ে করা যায়

আইনগত সব প্রক্রিয়া মেনে একতরফা বা দুই পক্ষের সম্মতিতে ডিভোর্স সম্পন্ন হওয়ার পর স্বামী বা স্ত্রী যেকোনো দিন পুনরায় বিয়ে করতে পারেন। তবে নারীদের ক্ষেত্রে, খুলা বা তালাক সম্পন্ন হলেও নতুন বিয়ের আগে তিন মাসের ইদ্দতকাল মেনে চলা বাধ্যতামূলক। যদি স্ত্রী গর্ভবতী থাকেন, তবে সন্তান জন্ম না নেওয়া পর্যন্ত নতুন বিয়ে করা যাবে না। এই নিয়ম নিশ্চিত করে যে সন্তান ও মাতার অধিকার রক্ষা পায় এবং ইসলামি বিধান অনুযায়ী পুনর্বিবাহ সম্পূর্ণ বৈধ হয়।

ডিভোর্স কার্যকরের পর আগের স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে পুনরায় সংসার

তালাক কার্যকরের পর যদি স্বামী তাঁর তালাক দেওয়া স্ত্রীকে আবার গ্রহণ করতে চান, তবে নোটিশ প্রদানের ৯০ দিনের মধ্যে এটি করা সম্ভব। এই সময়ে তালাক পুরোপুরি কার্যকর হয়নি, তাই স্বামী স্বেচ্ছায় স্ত্রীকে পুনরায় গ্রহণ করতে পারেন। রুজু (Rujoo) করার জন্য নতুন নিকাহের প্রয়োজন হয় না; স্বামী এবং স্ত্রী আগের মতোই আইনগতভাবে স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই থাকেন। ৯০ দিনের মধ্যে রুজু করলে, স্বামীকে সেই সময়ের ভরণপোষণ দিতে হবে। ৯০ দিনের পর তালাক কার্যকর হলে, পুনরায় সংসার করার জন্য নতুন নিকাহ এবং রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক।

ডিভোর্সের পর দেনমোহর ও ভরণপোষণ

আমাদের দেশে একটি প্রচলিত ভুল ধারণা হলো, স্ত্রী যদি তালাক প্রদান করেন, তাহলে তিনি দেনমোহর পাবেন না। এটি সম্পূর্ণ ভুল। মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, স্ত্রী তালাক দিলেও দেনমোহর (Mahr) পাওয়ার অধিকার রাখেন। বিবাহবিচ্ছেদ যেভাবেই হোক, স্ত্রী অবশ্যই দেনমোহর পাবেন। যদি নিকাহনামায় কোনো উশুল বা বাকি দেনমোহরের বিষয় লেখা থাকে, তাহলে সেই বকেয়া টাকা স্ত্রী আদায় করতে পারবেন।

এর পাশাপাশি, বিয়ে চলাকালীন সময়ে স্বামীকে স্ত্রীকে উপযুক্ত ভরণপোষণ (Maintenance / Nafaqah) প্রদান করতে হয়। এতে খাবার, পোশাক, চিকিৎসা ও আবাসনের ব্যয় অন্তর্ভুক্ত। যদি স্বামী এই দায়িত্ব পূরণে ব্যর্থ হন, স্ত্রী আইনগতভাবে আদালতের মাধ্যমে ভরণপোষণ দাবী করতে পারেন।

হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ডিভোর্স

বাংলাদেশে হিন্দু ব্যক্তিদের জন্য নির্দিষ্ট হিন্দু বিবাহবিচ্ছেদ আইন নেই। তবে দাম্পত্য সম্পর্ক তিক্ত হয়ে গেলে একজন হিন্দু স্ত্রী তাঁর স্বামী থেকে পৃথক ভরণপোষণ ও পৃথক বাসস্থান দাবি করে আদালতে মামলা করতে পারেন। বাস্তবে, হিন্দুধর্মাবলম্বীরা সাধারণত দেওয়ানি আদালতে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে ঘোষণামূলক মামলা (Declaratory Suit) দায়ের করেন। আদালত দাম্পত্য সম্পর্কের অবস্থা, আর্থিক পরিস্থিতি এবং অন্যান্য প্রমাণাদি বিবেচনা করে রায় দেন।

অর্থাৎ, হিন্দু ব্যক্তিরা আইনগতভাবে বিবাহবিচ্ছেদ চাইতে পারলেও, এটি মূলত আদালতের মাধ্যমে সিদ্ধান্তমূলক হয়ে থাকে এবং সরাসরি ইসলামি পারিবারিক আইনের মতো স্বতঃসিদ্ধ নয়।

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের ডিভোর্স

খ্রিষ্টান দম্পতি যদি বিবাহবিচ্ছেদ (ডিভোর্স) চান, তবে জেলা জজ আদালত অথবা হাইকোর্ট বিভাগের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। The Divorce Act, 1869-এর ধারা ১৭ ও ২০ অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদ ও বাতিল সম্পর্কিত রায় হাইকোর্ট বিভাগে নিশ্চিত করতে হয়। এই প্রক্রিয়া অনেক বিচারপ্রার্থীর জন্য জটিল ও সময়সাপেক্ষ।

প্রকৃতপক্ষে, কিছু খ্রিষ্টান দম্পতি আফিডেভিট বা ব্যক্তিগত চুক্তির মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ ও পুনর্বিবাহ করার চেষ্টা করেন, কিন্তু এটি আইনসিদ্ধ নয়। আইন অনুযায়ী, বিবাহবিচ্ছেদ কার্যকর হতে হলে আদালতের রায় ও নথিপত্র নিশ্চিত করা আবশ্যক, যা নতুন বিবাহের জন্য আইনি ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

ভিন্নধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ডিভোর্স

বিশেষ বিবাহ আইন (Special Marriage Act) অনুযায়ী যেসব দম্পতি বিয়ে করেছেন, তারা স্বেচ্ছায় একপক্ষীয়ভাবে বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারেন না। এই আইন অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদ চাইলে ১৮৬৯ সালের ডিভোর্স অ্যাক্ট অনুযায়ী আদালতের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। আদালতের অনুমতি ছাড়া শুধু হলফনামা পাঠানো বা নোটিশ দেওয়ার মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ কার্যকর হয় না।

আদালতের অনুমতি ছাড়া যদি কেউ বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন করার চেষ্টা করেন, তবে অপর পক্ষ আইনগতভাবে তা চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। অর্থাৎ, ভিন্নধর্মাবলম্বীদের জন্য বিবাহবিচ্ছেদ অবশ্যই আদালতের মাধ্যমে এবং আইনসম্মতভাবে সম্পন্ন করতে হয়।

ডিভোর্স না দিয়ে বিয়ের শাস্তি

বাংলাদেশের দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ধারা ৪৯৩–৪৯৮ বিয়েসংক্রান্ত অপরাধ এবং তাদের শাস্তি নির্ধারণ করে।

১. বর্তমান থাকা অবস্থায় পুনরায় বিয়ে (ধারা ৪৯৪)

  • স্বামী বা স্ত্রী যদি বর্তমান স্ত্রী/স্বামীর অনুমতি ছাড়াই পুনরায় বিয়ে করেন, তবে তা আইনগতভাবে বাতিল।

  • অপরাধ প্রমাণিত হলে, প্রতারণাকারীকে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড হতে পারে।

  • ব্যতিক্রম: যদি স্বামী বা স্ত্রী দীর্ঘ ৭ বছর পর্যন্ত নিরুদ্দেশ থাকেন এবং জীবিত থাকার কোনো তথ্য পাওয়া না যায়, তখন পুনরায় বিয়ে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।

  • বিশেষ পরিস্থিতিতে, বর্তমান স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে সালিসি পরিষদের মাধ্যমে বিয়ে করলে পুনরায় বিয়ে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।

২. প্রতারণা বা গোপন রেখে পুনরায় বিয়ে (ধারা ৪৯৫)

  • আগের বিয়ের কথা গোপন রেখে প্রতারণা করে বিয়ে করলে এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

  • অপরাধ প্রমাণিত হলে, ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে পারে।

৩. অন্যের স্ত্রীকে জেনেশুনে বিয়ে করা (ধারা ৪৯৭)

  • অন্যের স্ত্রীকে জেনে বিয়ে করলে তা বাতিল ও ব্যভিচারের শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

  • অপরাধ প্রমাণিত হলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড হতে পারে।

সংক্ষেপে, বাংলাদেশে পুনরায় বিয়ে করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন না করলে আইনি দায়ভার ও শাস্তি হতে পারে।

ডিভোর্স FAQ (বাংলাদেশ)

মুসলিম দম্পতির জন্য স্বামী তালাক দিতে পারেন, এবং স্ত্রী ডিভোর্স চাইলে নিকাহনামার ১৮ নম্বর কলামে অধিকার থাকা বা আদালতের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। হিন্দু বা খ্রিষ্টানদের ক্ষেত্রে আদালতের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ভিন্নধর্মী বা Special Marriage Act-এর ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি বাধ্যতামূলক।

পারস্পরিক সম্মতিতে ডিভোর্সে (Mubarat / Khula) স্বামী ও স্ত্রী দুজনই সম্মত হয়ে দেনমোহর ও ভরণপোষণ নির্ধারণ করে সম্পর্ক শেষ করেন। মুসলিম আইনে ৯০ দিনের নোটিশ এবং সালিসি প্রক্রিয়া মেনে ডিভোর্স কার্যকর হয়।

হ্যাঁ, ডিভোর্স যেভাবেই হোক, স্ত্রী দেনমোহর এবং বিয়ে চলাকালীন ভরণপোষণ পাবেন। স্বামী যদি এ দায়িত্ব পূরণে ব্যর্থ হন, স্ত্রী আদালতের মাধ্যমে দাবি করতে পারেন।

মুসলিম নারীদের ক্ষেত্রে খোলা তালাকের পর নতুন বিয়ে করার আগে ৩ মাস ইদ্দতকাল পালন করতে হয়। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে আদালতের রায় বা অনুমতি অনুযায়ী নতুন বিবাহ সম্ভব।

প্রথম স্ত্রীকে তালাক না দিয়ে বা অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করলে দণ্ডনীয় অপরাধ। দণ্ডবিধি ৪৯৪–৪৯৭ ধারায় কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড হতে পারে।

বাংলাদেশে ডিভোর্স মামলায় অভিজ্ঞ আইনজীবীর জন্য বাংলাদেশের শীর্ষ আইন ফার্ম এ যোগাযোগ করতে পারেন।

ডিভোর্সের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা এবং পারিবারিক বিষয়গুলো মোকাবিলার জন্য দক্ষ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে ডিভোর্স সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রক্রিয়া জানতে এবং ধাপে ধাপে গাইড পেতে Divorce Process in Bangladesh পেজটি দেখতে পারেন। এই লিঙ্কে আপনি ডিভোর্সের প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় নোটিশ, ইদ্দতকাল এবং অন্যান্য আইনি ধাপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাবেন।

আপনি যদি ডিভোর্সের জন্য দক্ষ আইনজীবী দরকার মনে করেন, তাহলে এখানে ক্লিক করে যোগাযোগ করুন এবং Rashel’s Law Desk-এর অভিজ্ঞ আইনজীবীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করুন। তারা আপনার ডিভোর্স মামলা পরিচালনায় সহায়তা করবে এবং আইনি পরামর্শ দেবে।

আইনি পরামর্শের জন্য

Share via
Copy link
Powered by Social Snap